হযরত শাহ পরাণ (রঃ)


হযরত শাহ পরাণ (রঃ) এর মাজার শারীফ

হযরত শাহ পরাণ (রঃ) এর পূর্ব পুরুষগণ বোখারার অধিবাসী ছিলেনশাহ পরাণের উর্ধ্বতন ৪র্থ পুরুষ শাহ জামালুদ্দিন বোখারার হাতে প্রথম সমরকন্দ ও পরে তুর্কিস্থানে এসে বসবাস করিতে ছিলেনতার পিঁতা খ্যাতনামা আলেম ও কামেল বুজুগৃ ছিলেনতাঁর মাতা ধর্মপরায়ণ মহিলা ছিলেনতিনি হযরত শাহজালাল (রঃ) এরই সহোদরা বোন ছিলেনহযরত শাহ পরাণ (রঃ) গর্ভ থেকেই গুলতানুল আযকারের সবক হাসিল করে জন্ম লাভ করেছিলেনপাগলা আমিন নামে নেশাপুরের জনৈক বিখ্যাত দরবেশের নিকট থেকে মারফতের সবক নেনসৈয়দ কামাল উদ্দিন নিকট থেকে তাফসীর, হাদিস, ফেকাহ ইত্যাদি বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন লাভ করেনতাঁর মামা হযরত শাহজালাল (রঃ) হিন্দুস্থানের যাত্রার খবর পেয়ে তিনি মামার সঙ্গী হয়ে যানতাঁরা মামা থেকে দিল্লী থেকে প্রাপ্ত কবুতর জোড়া সিলেটে নিয়ে আসার পর বংশ বৃদ্ধি পেতে থাকেসেগুলো কেহ মেরে ফেলতেনএক মাত্র হযরত শাহ পরাণ (রঃ) প্রতিদিন একটি করে কবুতর খেতেনকবুতরের পালকগুলি রেখে দিতেনতাঁর মামা একদিন জালালী কবুতরের সংখ্যা কম দেখে খাদেমদের জিজ্ঞাসা করে আসল কারণ জানতে পারেনখাদেমগণ হযরত শাহজালাল (রঃ) কে আসল ঘটনা বলে দিলেনহযরত শাহ পরাণ (রঃ) এটা জেনে মামাকে বললেন আপনার কবুতরগুলো ফেরত দিচ্ছিএই বলে তার রক্ষিত পালকগুলি বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে বললেন যাও আল্লাহর হুকুমে শাহজালালের দরবারে পৌছে যাওসাথে সাথে পালকগুলি জালালী কবুতর হয়ে তার মামার দরবারে হাজির হল

মাজারের ভীতরে প্রায় ২০০ বছরের একটি বট গাছ
  হযরত শাহজালাল (রঃ), হযরত শাহ পরাণ (রঃ) কে ডেকে তার আধ্যাত্মিকতার প্রশংসা করেন ও সন্তুষ্ট হনপাশাপাশি প্রকাশ্যে কেরামতির ব্যাপারে জনমনে ভূল ব্যাখ্যাটি অবহিত করেনউল্লেখ্য যে, শাহ পরাণ (রঃ) বৃহত্তর সিলেটের আনাচে কানাচে ইসলামের বাণী পৌছাতে জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেনহযরত শাহজালাল (রঃ) এর আদেশে খাদিম নগর স্থানে আবাস নির্মাণ করে ইসলামের কাজ শেষ জীবন পর্যন্ত চালিয়ে যানসিলেট শহর থেকে প্রায় ছয় মাইল দূরে খাদিম নগর হযরত শাহ পরাণ (রঃ) চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন

হযরত শাহ পরানণ (রঃ) কে নিয়ে রচিত একটি জনপ্রিয় গানের অংশবিশেষঃ-
কৈতর উড়িলে দুই পাংখা মেলিয়া,
পালকেতে ফুঁ দিলা শাহ পরাণ আউলিয়া
বিছমিল্লার বরকতে পায়রায় দেহে পাইলো জান
কেরামতি জাহির হইলো কামিল শাহ পরাণ,
সেই কেরামতি জাহির আছে সয়াল জুড়িয়া
পালকেতে ফুঁ দিলা শাহ পরাণ আউলিয়া
শাহজালালকে পায়রা দিলা নিজামুদ্দিন পীর
সেই পায়রাগণ ছিলটেতে বান্ধে সুখের নীড়
আল্লাহ, আল্লাহ জিকির পড়ে তারা সবে বইয়া
পালকেতে ফুঁ দিলা শাহ পরাণ আউলিয়া
(সৈয়দ মোস্তফা কামাল) 
(তথ্যঃ- সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ত "হিস্টোরিয়ান ডঃ মুমিনুল হক"। পৃষ্টা-৬৯)

(ফটো সংগ্রহেঃ মিশকাত আহমেদ)