দু’টি পাতা একটি কুড়িঁর বৃত্তে বাংলাদেশের ভূ-স্বর্গ © ভূমি শ্রীমঙ্গল। চা-এর প্রাণকেন্দ্র শ্রীমঙ্গল আর্ন্তজাতিক ভাবে পরিচিত। শ্রীমঙ্গল চা এবং আনারস এর রাজধানী হিসেবেও খ্যাত। প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের অপূর্ব লীলা ভূমি এবং শ্রীময় ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই জনপদের রয়েছে সুখ্যাতি। শ্রীমঙ্গল মৌলভীবাজার জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। ইহার পূর্বে ত্রিপুরার পাহাড়, উত্তর-পূর্বে ভানুগাছের পাহাড়, দক্ষিণে সাতঁগাঁও এর পাহাড় এবং উত্তর-পশ্চিমে হাইল হাওর ও মৌলভীবাজার সদর থানা। শ্রীমঙ্গল অতীতের পার্বত্য ত্রিপুরা, আসাম, ঢাকা বিভাগ প্রভৃতি ভৌগোলিক সীমারেখায় অর্ন্তভূক্ত ছিল। বর্তমান শ্রীমঙ্গল শেরশাহ প্রবর্তিত পরগনা পদ্ধতির কয়েকটি পরগনা নিয়ে গঠিত। এইগুলোর মধ্যে সাঁতগাঁও, চাউঁথলি, গিয়াসনগর, চৌয়াল্লিশের কিছু অংশ দিনার পুরের কিংদংশ এবং আতান গিরির কিয়দংশ।
![]() |
লাউয়াছড়া বন, শ্রীমঙ্গলের একাংশ |
বৃটিশ আমলের প্রথম দিকে বৃহত্তর সিলেট জেলা সহ শ্রীমঙ্গল ঢাকা বিভাগের অধীনে ছিল। ১৮৭৮ সালে বৃহত্তর সিলেটকে আসামের সাথে যুক্ত করা হয়। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পর শ্রীমঙ্গলসহ বৃহত্তর সিলেট জেলাকে আবার ঢাকা বিভাগের অধীনে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের পর বৃহত্তর সিলেটসহ শ্রীমঙ্গল আসামের অর্ন্তভুক্ত করা হয়। ১৮৮২ সালে মৌলভীবাজারকে সাউথ সিলেট মহকুমা ঘোষণা করা হয় এবং ১৯১২ সালে শ্রীমঙ্গলকে থানা ঘোষণা করা হয়। শ্রীমঙ্গলকে থানা হিসেবে ঘোষণা করার গ্রেজেট নোটিফিকেশনের তারিখ ও b¤^i হচ্ছে ১০ জানুয়ারী, ১৯১২ ইংরেজী b¤^i ১৭৬ জি.জে। ১৯১৫ সালে আসাম সরকারের এক নির্দেশে লোকাল বোর্ড চালু হলে শ্রীমঙ্গলকে মৌলভী বাজার লোকাল বোর্ড এর অধীনে ন্যাস্ত করা হয়। এই এলাকায় চা-চাষের উপযোগী ভূমি থাকায় এখানে চা বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয়। চা-পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই অঞ্চলে রেল লাইন স্থাপিত হয়। প্রথম শ্রেনীর মর্যাদা দিয়ে শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশনের গোড়াপত্তন করা হয়। শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশন প্রতিষ্ঠা করার পূর্বে থানা সদর দপ্তর শ্রীমঙ্গলে স্থানান্তরিত হয়। শ্রীমঙ্গল অনেকের কাছে মঙ্গল র্তীত বলে বিবেচিত। চাকুরী জীবন শেষে এখানে বসতি স্থাপনের প্রবণতা অতীতে যেমন ছিল বর্তমানেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এক কথায় শ্রী অর্থাৎ সুন্দর এবং মঙ্গলের মহামিলন ক্ষেত্র শ্রীমঙ্গল উপজেলা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী আনারস উৎপাদন হয়। প্রায় পাচঁ হাজার একর ভূমিতে দেশের ৭০% শতাংশ আনারস উৎপাদিত হয়ে থাকে। দেশের একমাত্র উপজেলা হিসেবে শ্রীমঙ্গল চা ও আনারস উৎপাদনের শীর্ষে অবস্থান করছে। তাছাড়া লেচু, লেবু, কাঁঠাল, কাঠ উৎপাদনে দেশের অন্যান্য উপজেলার মধ্যে র্শীষে রয়েছে। প্রাকৃতিক নয়ণাভিরাম দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। প্রাকৃতিক ভাবে f~-¯^M©xq হিসেবে যে অবস্থান ঠিক তেমনি শ্রীমঙ্গল নামেও যথার্থ মূল্যায়িত হয়েছে। উপমহাদেশের কাশ্মীর রাজ্যকে f~-¯^M© রাজ্য বলে অভিহিত করা হয়। বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য মন্ডিত ভূমি শ্রীমঙ্গল। এই দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রীমঙ্গলকে বাংলঅদেশের f~-¯^M© ভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
(তথ্য : সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ত- "হিস্টোরিয়ান ডঃ মুমিনুল হক" - পৃষ্টা-১২০)
(ফটো সংগ্রহে : মিশকাত আহমদ 'ডাইনামিক ওয়েব ডিজাইনার')
0Awesome Comments!