![]() |
কমলারাণীর দীঘি |
সিলেট বিভাগের মৌলভী বাজার জেলার রাজনগর থানায় কমলারাণীর দীঘি অবস্থিত। উল্লেখযোগ্য যে, সুবিদ নারায়ণ রাজা হিসেবে শিক্ষিত সংস্কারপন্থি ছিলেন। রাজা স্ত্রী কমলারাণীকে নিয়ে সুখে সাচ্ছন্দে রাজ্য পরিচালনা করছিলেন। সে সময় উমা নন্দ রাজার এক ডাক সাইটে মন্ত্রী ছিলেন। রাজার ভান্ডার রক্ষক ছিলেন cևį^i বিশ্বাস এবং গোবিন্দপুরকায়স্থ ছিলেন প্রধান লেখক। বিজ্ঞ পরিষদ নিয়ে রাজা সুবিদ নারায়নের রাজ্য ভালভাবে চলছে তখন এমনি এক রাতে রাজা সপ্নে দেখলেন কে যেনো আদেশ দিচ্ছে হে ইটা রাজ্যের রাজা তোমার বাড়ীর সম্মুখে ১২ জৈষ্টি, ১২ কেদার ও ১২ হাল জমি নিয়ে একটি সুপ্রশস্থ দীঘি খনন করো। স্ত্রী কমলারাণী রাজার সপ্নের কথা শুনে রাজা সুবিদ নারায়ণকে উৎসাহ দিলেন। তিনি ছিলেন ¯^vgxi অনুপ্রেরণা দাতা। দরিদ্র প্রজাগণ যদি সুপানিয় পান করতে না পারে তবে ক্ষতির সম্ভাবনা ভেবে রাজা খনন কাজ আরম্ভ করলেন। কথিত আছে যে, দীঘি খনন করতে প্রথম কোদাল খনন কারীকে রাণী গলার হার উপহার দিয়েছিল। খনন কাজ শেষ হলে রাজা এক মহাবিপদের সম্মুখিন হন। এত টাকা, জমি, পরিশ্রমের পর দীঘিতে জল নেই। রাজা চিন্তায় অস্থির দিশেহারা। তখন রাজা আবার সপ্নে দেখলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত স্ত্রী কমলারাণীকে জলদেবীর উদ্দ্যেশ্যে প্রেরণ না করবেন ততক্ষন দীঘি জলশুন্য রবে। রাজা ¯^‡cœi বিবরণ কমলারাণীকে বর্ণনা করলেন। রাণী স্চ্েছায় জলদেবীর উদ্দেশ্যে যেতে রাজী হলেন। পন্ডিতবর্গের পরামর্শে কমলারাণীকে দীঘিতে অর্পনের তারিখ ধার্য্য হল। রাজ্যের প্রজা, মন্ত্রী সবাই উৎসুতভাবে যেন দৃশ্য অবলোকনের প্রহর গুনছে। নির্ধারিত দিনে কমলারাণী বত্রিশ অলংকারে সেজে তিন মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশুকে রাজ গৃহে রেখে আত্মীয় ¯^Rb প্রজাবৃন্দের লোকারণ্য দীঘির পাড়ের সবাইকে শেষ বিদায় জানিয়ে দীঘিতে অবতরণ করতে লাগলেন। রাণী যখন দীঘির তলদেশে নেমে জলদেবীর স্ততি বন্দনা শেষ করলেন সাথে সাথে দীঘি জলে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। তখন রাণী শেষ বারের মতো মাতাপিতা দেখার সআদ ছিল কিন্তু আর দেখা হলো না। কথিত আছে যে, মাতাপিতার আহাজারীতে জলদেবী দয়া করে কমলারাণীকে জলের উপর ভাসিয়েছিলেন। কমলা রাণী রাজাকে ¯^‡cœ আদেশ দিলেন হে প্রিয়তম ¯^vgx আমার দুগ্ধপোষ্যকে দীঘির পাড়ে ছোট গৃহ বানিয়ে সুর্য্য উঠার আগে রাখবে আমি দুগ্ধ পান করানোর জন্য আর দর্শনের সুযোগ পাবো। কিন্তু আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। আমি তোমার মানস মন্দিরে থাকবো। রাণীর আদেশ রাজা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। কিন্তু রাণী এসে দুগ্ধ পান করিয়ে আবার পানিতে চলে যান। এভাবে কয়েকদিন যাবার পর একদিন রাজা দুগ্ধ পান অবস্থায় রাণীকে আচঁলে ধরতে গেলেন। স্পর্শ করতে পারবেন না একথা রাজা ভুলে গিয়েছিলেন। রাণী তৎক্ষণাৎ দীঘিতে ঝা৭প দিলেন। কথিত আছে একটি ¯^Y© নৌকা মাঝিসহ জলে ভেসে উঠেছিল। রাণী সেই নৌকা চড়ে কাওয়াদীঘি হাওরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন এবং রাজাকে বলে গেলেন আমি আর দীঘিতে থাকবো না। অতঃপর নৌকাটি অজানা, অচেনা গন্তব্যের দিকে অদৃশ্য হয়ে গেল।
উল্লেখ্য যে, প্রায় তিন মাস সময় লাগে কমলারাণীর দীঘি খনন করতে। এত ২৬০ জন শ্রমিক কাজ করেন। কথিত আছে যে, শ্রমিকরা কাজ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় প্রতিদিস দীঘির উত্তরে এক কোদাল মাটি কেটে প্রত্যেকে চলে যেত। শেষ পর্যন্ত তা একটি দীঘিতে পরিগণিত হয়। এই দীঘি কোদালী দীঘি নামে পরিচিত। এলাকাতে কমলারাণীর দীঘি সাগর দীঘি নামে পরিচিত অনেকের কাছে। আরেকটি গল্প প্রচলিত আছে যে, পানি না উঠায় রাজা ¯^‡cœ দেখলেন যে ৫ জন সুন্দরী ললনা নিজের স্ত্রীসহ দীঘির মধ্যখানে ১৬ হস্ত (হাত) গভীর কোপে সিন্দুর, তৈল আর শংক সহ উপাসনা করলে পানি উঠবে। অবশেষে রাজা ¯^cœ অনুযায়ী তাদের দীঘিতে পাঠালেন। কিন্তু পানি উঠার পর চার জন ললনা তীরে উঠলেও রাজার স্ত্রী উঠতে পারেননি বলে জনশ্রুতি রয়েছে। (সংক্ষেপিত)
(তথ্যঃ বাংলার ইতিবৃত্ত - হিস্টোরিয়ান ডঃ মুমিনুল হক - পৃষ্টা-৩৪৮)
(ছবি সংগ্রহঃ ওয়েব ডিজাইনার মিশকাত আহমদ)